আপনার ডাটা ও ডিভাইস সুরক্ষার আধুনিক পদ্ধতিগুলো জেনে নিন
সাইবার সিকিউরিটি
আপনার কম্পিউটার, স্মার্টফোন, সার্ভার, নেটওয়ার্ক সিস্টেম ও ডাটা হ্যাকিং থেকে নিরাপদ রাখার নামই হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি। এটি ‘ইনফরমেশন টেকনোলজি সিকিউরিটি’ ও ‘ইলেকট্রনিক ইনফরমেশন সিকিউরিটি’ নামেও পরিচিত।
ক্যাটাগরি:
- নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি হচ্ছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে হ্যাকার ও ম্যালওয়ার থেকে বাঁচানোর পদ্ধতি।
- এপ্লিকেশন সিকিউরিটি হলো ডিভাইস ও সফটওয়ারকে অনলাইন থ্রেট থেকে রক্ষা করার উপায়।
- ইনফরমেশনে সিকিউরিটি হচ্ছে পিসিতে ও অনলাইনে থাকা ডাটা ও ইনফরমেশন রক্ষা করার ব্যবস্থা।
- অপারেশনাল সিকিউরিটি হচ্ছে নিরাপদে ডাটা হ্যান্ডলিং ও প্রটেক্ট করার ব্যবস্থা।
- ডিজাস্টার রিকভারি এন্ড বিজনেস কন্টিউইটি হচ্ছে সাইবার অ্যাটাক বা অন্য কোন ম্যালওয়ারের আক্রমণে ডাটা বা অপারেশনের বিপরীতে কোন অর্গানাইজেশন যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
- এন্ড ইউজার এডুকেশন হচ্ছে কারো দ্বারা ইচ্ছাকৃত বা আকস্মিক ভাইরাস বা ম্যালওয়ার ছড়িয়ে দেওয়ার বিপরীতে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেফটি বজায় রাখার ব্যবস্থা।
সাইবার থ্রেটের রকমফের:
- সাইবার ক্রাইম হচ্ছে কোন ব্যক্তি বা গ্রুপ কর্তৃক আর্থিক লাভ অথবা বিশৃঙ্খলার উদ্দেশ্যে নেটওয়ার্কিং সিস্টেম এটাক করা।
- সাইবার এটাক হচ্ছে রাজনৈতিক বা আর্থিক উদ্দেশ্যে ইনফরমেশন একত্র করা।
- সাইবার টেরোরিজম হচ্ছে ভয় ও আতঙ্ক তৈরির উদ্দেশ্যে একক বা যৌথভাবে কোন ইলেকট্রনিক সিস্টেমকে আন্ডারমাইন করা।
ম্যালওয়ার:
হ্যাকার ও সাইবার ক্রিমিনালরা কারো কম্পিউটারের ক্ষতি করতে বা ডাটা চুরি করতে যে ক্ষতিকর সফটওয়ার তৈরি করে, তাই ম্যালওয়ার। প্রায়ই স্প্যাম ইমেইল বা সাধারণ ইমেইলের ছদ্মবেশে এটি ইউজারের কম্পিউটারে প্রবেশ করে এর ক্ষতি করে।
ক্যাটেগরি:
- ভাইরাস হচ্ছে এক প্রকারের সেলফ-রেপ্লিকেটিং প্রোগ্রাম। এটি কম্পিউটারের ক্লিন ফাইলের সঙ্গে এটাচড থাকে এবং কম্পিউটার সিস্টেমের মাধ্যমে ছড়িয়ে ম্যালিশিয়াস কোডের মাধ্যমে ক্ষতি করে।
- ট্রোজান হচ্ছে এমন ম্যালওয়ার, যা সাধারণ সফটওয়ারের মতো থাকে। সাইবার ক্রিমিনালরা একে ডাটা চুরি বা ক্ষতির উপায় হিসেবে ব্যবহার করে।
- স্পাইওয়ার হচ্ছে এমন সফটওয়ার, যা গোপনে ব্যবহারকারীর কাজ রেকর্ড করে। যার মাধ্যমে সাইবার ক্রিমিনালরা ডাটা ব্যবহার করে ক্রেডিট কার্ড ডিটেলস বা এমন ডাটা সংগ্রহ করে।
- র্যানসম ওয়ার হচ্ছে র্যানসম পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত কোন ইউজারের ফাইল ও ডাটা লক করে রাখার এক ধরনের প্রোগ্রাম।
- এডওয়ার হচ্ছে ম্যালওয়ার ছড়ানোর উদ্দেশ্যে কোন সফটওয়ারের এডভার্টাইজিং করার প্রোগ্রাম।
- বোটনেটস হচ্ছে ম্যালওয়ার আক্রান্ত কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক, যা হ্যাকার ও সাইবার ক্রিমিনালরা অনলাইনে বিভিন্ন অবৈধ কাজে ব্যবহার করে।
অতি সাম্প্রতিক কিছু সাইবার থ্রেট:
- ড্রাইডেক্স ম্যালওয়ার: ২০১৯ সালে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস গ্লোবাল ড্রাইডেক্স এটাকের অপরাধে একটি চক্রকে অভিযুক্ত করে। এই ম্যালওয়ার আন্তর্জাতিক পরিসরে অনেক পাবলিক, প্রাইভেট ও বিজনেস নেটওয়ার্কের ক্ষতির কারণ হয়েছিলো।
- রোমান্স স্ক্যাম: ২০২০ সালে আমেরিকায় এফবিআই ডেটিং সাইট ইউজারদের এই ম্যালওয়ারের ব্যাপারে সতর্ক করে। এর মাধ্যমে হ্যাকাররা ইউজারদের পার্সোনাল ডাটা চুরি করে।
- এমোটেট ম্যালওয়ার: ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার দেশটির ন্যাশনাল ইন্সটিউটগুলোকে এর ব্যাপারে সাবধান করেছিলো। এটি এমন এক ম্যালওয়ার, যা ডাটা চুরি ও অন্যান্য আরো ম্যালওয়ার নেটওয়ার্কের ভেতরে ঢোকা সহজ করে দিতে পারে।
সাইবার সেফটির জন্য কিছু টিপস:
- সফটওয়ার ও অপারেটিং সিস্টেম নিয়মিত আপডেট করুন। এতে লেটেস্ট সিকিউরিটি মিনস ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার পিসি নিরাপদ থাকবে।
- এন্টি ভাইরাস সফটওয়ার ব্যবহার করুন। সময়ে সময়ে এটি আপডেট করুন। এতে আপনার পিসির প্রতি ক্ষতিকর প্রোগ্রাম সহজে চিহ্নিত ও দূর করা সহজ হয়ে যাবে।
- স্ট্রং ও আনকমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এতে হ্যাকারদের পক্ষে আপনার ডিভাইস ট্র্যাক করা কঠিন হবে।
- অপরিচিত প্রেরকদের পাঠানো ইমেইল ওপেন করবেন না। কারণ প্রায়ই এমন ইমেইল ম্যালওয়ারের বাহন হয়ে থাকে।
- অপরিচিত উৎস থেকে আসা ইমেইল বা অপরিচিত ওয়েবপেজের লিংকে ক্লিক করবেন না। এটি ম্যালওয়ার ছড়ানোর খুব কমন একটি মাধ্যম।
- পাবলিক স্পেসে অনিরাপদ ওয়াইফাই কানেকশন ব্যবহার থেকে সাবধান হোন। এমন সব নেটওয়ার্ক প্রায়ই হ্যাকারদের সহজ লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠার কারণ হিসেবে এসে থাকে।
সিটিএন/টএম